back

সওয়াল জওয়াব

  • ১. তাওহীদ বলতে কি বুঝায়?
    উত্তরঃ আল্লাহ্‌ এক ও অদ্বিতীয়, আল্লাহ্‌ আমাদের রব বা প্রভু। তিনি আমাদের খালিক বা সৃষ্টিকর্তা।
  • ২. ইসলাম শব্দের অর্থ কি?
    উত্তরঃ ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি প্রতিষ্ঠা, আত্ম স্বমর্পন। মহান আল্লাহ্‌র আনুগত্যে নিজেকে সপে দেওয়া।
  • ৩. আল্লাহ সম্পর্কে তুমি কি জান?
    উত্তরঃ আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তার কোন শরীক নেই। তিনি সব জায়গায় আছেন এবং সব কিছু দেখেন ও সবকিছু জানেন।
  • ৪. ইসলামের ভিত্তি বা রুকন কয়টি ও কি কি?
    উত্তরঃ ইসলামের মূল ভিত্তি বা রুকন পাঁচটি। (১) কালেমা (২) নামায (৩) রোযা (৪) হজ্জ ও (৫) যাকাত
  • ৫. দুনিয়ায় কতজন নবী ও রাসুল এসেছেন?
    উত্তরঃ পবিত্র কোরআনে ২৫ জন নবী-রাসুলের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে আল্লাহ অনেক নবী ও রাসুল পাঠিয়েছেন। তাঁদের সংখ্যা এক লাখ চব্বিশ হাজার, কারো কারো মতে দুই লাখ চব্বিশ হাজার হতে পারে বলে ঐতিহাসিকগণ ধারণা করে থাকেন।
  • ৬. প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাব কয়টি ও কি কি?
    উত্তরঃ প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাব চারটি। তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও কুরআন।
  • ৭. আল- কুরআনে মোট কয়টি সূরা আছে? প্রথম ও শেষ সূরার নাম কি?
    উত্তরঃ আল- কুরআনে মোট ১১৪ টি সূরা আছে। প্রথম সূরার নাম সূরা "আল-ফাতিহা" এবং শেষ সূরার নাম সূরা "নাস"।
  • ৮. পবিত্র কোরআনের আয়াত সংখ্যা কত?
    উত্তরঃ পবিত্র কোরআনের আয়াত সংখ্যা ৬২৩৬ টি।
  • ৯. কোন সূরার প্রথমে "বিসমিল্লাহ" নেই?
    উত্তরঃ সূরা তওবা-র প্রথমে "বিসমিল্লাহ" নেই।
  • ১০. আসমানী কিতাবসমুহে ঈমান আনা কি?
    উত্তরঃ আসমানী কিতাবসমুহে ঈমান আনা ফরজ।
  • ১১. ফেরেস্তাগণ কে?
    উত্তরঃ ফেরেস্তাগণ আল্লাহ্‌র বিশেষ অনুগত সৃষ্টি/ তাঁরা পুরুষ ও নারী কোনটাই নন।
  • ১২. ফেরেস্তাগণের প্রতি ঈমান আনা কি?
    উত্তরঃ ফেরেস্তাগণের প্রতি ঈমান আনা ফরয।
  • ১৩. ৪ জন প্রসিদ্ধ ফেরেস্তার নাম লিখ ?
    উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ), মিকাঈল (আঃ), ইস্রাফীল (আঃ), ও আজরাঈল (আঃ)।
  • ১৪. তাকদীর বলতে কি বুঝ?
    উত্তরঃ অদৃশ্য বা ভাগ্যের উপর নির্ভর করাকে তাকদীর বলে। যা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হয়ে থাকে।
  • ১৫. তাকদীরে বিশ্বাস করা কি?
    উত্তরঃ তাকদীরে বিশ্বাস করা ফরয।
  • ১৬. তাকদীরে বিশ্বাস না করলে কি হবে?
    উত্তরঃ তাকদীরে বিশ্বাস না করলে সে লোক কাফির হয়ে যাবে।
  • ১৭. আখিরাত কাকে বলে?
    উত্তরঃ মৃত্যুর পর জীবনকে আখিরাত বলে। সে জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই।
  • ১৮. কিয়ামত কাকে বলে?
    উত্তরঃ বর্তমান সারা জাহানের ব্যবস্থাপনার শেষ পরিনতির নাম কিয়ামত।
  • ১৯. কুফর বলতে কি বোঝায়?
    উত্তরঃ "কুফর" আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ ঢেকে রাখা, গোপন রাখা, অবিশ্বাস করা ও অকৃতজ্ঞ হওয়া। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র অস্তিত্বকে অবিশ্বাস ও অস্বীকার করাকে কুফর বলে। ইসলামের মূল বিষয়সমূহকে অবিশ্বাস করাও কুফর। কুফর ঈমানের বিপরীত।
  • ২০. শিরক কাকে বলে?
    উত্তরঃ শিরক অর্থ আল্লাহ্‌র সাথে কাউকে শরীক করা।
  • ২১. বিদাত থেকে বাঁচতে হলে যা জানা আবশ্যক
    বিদ‘আত কাকে বলে এ বিষয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। অনেকের ধারণা যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে ছিলনা তা-ই বিদ‘আত। আবার অনেকে মনে করেন বর্তমান নিয়মতান্ত্রিক মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি একটি বিদ‘আত, মসজিদে কাতার করে নামায পড়া বিদাত, বিমানে হজ্জে যাওয়া বিদ‘আত, মাইকে আজান দেয়া বিদ‘আত ইত্যাদি। এ সকল দিক বিবেচনা করে তারা বিদ‘আতকে নিজেদের খেয়াল খুশি মত দুই ভাগ করে কোনটাকে হাসানাহ (ভাল বিদ‘আত) আবার কোনটাকে সাইয়্যেআহ (মন্দ বিদ‘আত) বলে চালিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে আবুল হাসান আলী নদভী (রহঃ) তার ‘র্শিক ও বিদ‘আত’ কিতাবে বিদ‘আতের পরিচ্ছন্ন সংজ্ঞা উল্লেখ করেছেন। তা হল: যে বিশ্বাস বা কাজ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করেননি কিংবা পালন করার নির্দেশ দেননি সেই ধরনের বিশ্বাস বা কাজকে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করা,এর অঙ্গ বলে সাব্যস্ত করা,সওয়াব বা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় মনে করেএই ধরনের কাজ করার নাম বিদ‘আত।
  • ২২. মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয় আমলসূমহ
    মা-বাবা ছোট শব্দ, কিন্তু এ দুটি শব্দের সাথে কত যে আদর, স্নেহ, ভালবাসা রয়েছে তা পৃথিবীর কোন মাপযন্ত্র দিয়ে নির্ণয় করা যাবে না। মা-বাবা কত না কষ্ট করেছেন, না খেয়ে থেকেছেন, অনেক সময় ভাল পোষাকও পরিধান করতে পারেন নি, কত না সময় বসে থাকতেন সন্তানের অপেক্ষায়। সেই মা বাবা যাদের চলে গিয়েছেন, তারাই বুঝেন মা বাবা কত বড় সম্পদ। যেদিন থেকে মা বাবা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন সেদিন থেকে মনে হয় কী যেন হারিয়ে গেল,তখন বুক কেঁপে উঠে, চোখ থেকে বৃষ্টির মত পানি ঝরে, কী শান্তনাই বা তাদেরকে দেয়া যায়! সেই মা বাবা যাদের চলে গিয়েছে তারা কি মা-বাবার জন্য কিছুই করবে না?। এত কষ্ট করে আমাদের কে যে মা-বাবা লালন পালন করেছেন তাদের জন্য আমাদের কি কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে। আলোচ্য প্রবন্ধে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মৃত মা-বাবা জন্য কী ধরনের আমল করা যাবে এবং যে আমলের সওয়াব তাদের নিকট পৌছবে তা উল্লেখ করা হলোঃ ১. দান-ছাদকাহ করা, বিশেষ করে সাদাকায়ে জারিয়াহ প্রদান করা ২. বেশী বেশী দু‘আ করা ৩. মা-বাবার পক্ষ থেকে সিয়াম পালন ৪. হজ্জ বা উমরাহ করা ৫. মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করা ৬. মা-বাবার ওসিয়ত পূর্ণ করা ৭. ঋণ পরিশোধ করা ৮. কাফফারা আদায় করা ৯. কবর যিয়ারত করা
  • ২৩. ইস্তিখারা কখন করতে হয়?
    মানুষ বিভিন্ন সময় একাধিক বিষয়ের মধ্যে কোনটিকে গ্রহণ করবে সে ব্যাপারে দ্বিধা-দন্ধে পড়ে যায়। কারণ, কোথায় তার কল্যাণ নিহীত আছে সে ব্যাপারে কারো জ্ঞান নাই। তাই সঠিক সিদ্ধান্তে উপণিত হওয়ার জন্য আসমান জমীনের সৃষ্টিকর্তা, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত সকল বিষয়ে যার সম্যক জ্ঞান আছে, যার হাতে সকল ভাল-মন্দের চাবী-কাঠি সেই মহান আল্লাহর তায়ালার নিকট উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করতে হয়। যেন তিনি তার মনের সিদ্ধান্তকে এমন জিনিসের উপর স্থীর করে দেন যা তার জন্য উপকারী। যার ফলে তাকে পরবর্তীতে আফসোস করতে না হয়। যেমন, বিয়ে, চাকরী, সফর ইত্যাদি সে বিষয়ে ইস্তেখারা করতে হয়।
  • ২৪. এক মিনিটে আপনি যে যে আমলগুলো করতে পারেন
    • ১. এক মিনিটে আপনি সূরা ফাতিহা মনে মনে দ্রুতগতিতে ৩ বার পড়তে পারেন। কেউ কেউ হিসাব কষে দেখিয়েছেন একবার সূরা ফাতিহা পড়লে ৬০০ টিরও বেশি নেকি পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি তিনবার সূরা ফাতিহা পাঠ করেন তবে আল্লাহ্‌র ইচ্ছায় ১৮০০ এর বেশি নেকি হাসিল করবেন। এত নেকী আপনি এক মিনিটেই পাচ্ছেন।
    • ২. এক মিনিটে আপনি সূরা ইখলাস (ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ) মনে মনে দ্রুতগতিতে ২০ বার পড়তে পারেন। এই সূরা একবার পাঠ করলে কুরআন শরীফের এক তৃতীয়াংশ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি এ সূরাটি ২০ বার পাঠ করেন তবে তা ৭ বার কুরআন পড়ার সমতুল্য। অতএব আপনি যদি এ সূরাটি প্রতিদিন এক মিনিটে ২০ বার পাঠ করেন তবে মাসে আপনার ৬০০ বার পাঠ করা হয় এবং বছরে ৭২০০ বার পাঠ করা হয়। যার সওয়াব ২৪০০ বার সম্পূর্ণ কুরআন পড়ার সমতুল্য।
    • ৩. এক মিনিটে আপনি আল্লাহর কিতাবের এক পৃষ্ঠা পাঠ করতে পারেন।
    • ৪. এক মিনিটে আপনি আল্লাহর কিতাবের ছোট একটি আয়াত মুখস্থ করতে পারেন।
    • ৫. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সুব্‌হানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আক্‌বার পাঠ করা যা কিছুর উপর সূর্য উদিত হয়েছে সবকিছু থেকে আমার নিকট অধিক প্রিয়।”[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন মুসলিম (২৬৯৫)]আপনি এক মিনিটে বাক্যগুলো ১৮ বারের বেশি পড়তে পারেন। এ বাক্যগুলো আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়। এগুলো সর্বোত্তম কথা এবং আমলের পাল্লাতে এগুলোর ওজন অনেক বেশি হবে। যেমনটি এ মর্মে বর্ণিত সহীহ হাদিসসমূহে এসেছে
    • ৬. এক মিনিটে আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ৫০ বার দরূদ পাঠ করতে পারেন। শুধু পড়বেন “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। এর প্রতিদানে আল্লাহ আপনার উপর ৫০০ বার সালাত (রহমত) পাঠাবেন। কারণ একবার দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ ১০ বার এর প্রতিদান দেন
    • ৭. এক মিনিটে আপনার মন আল্লাহর কৃতজ্ঞতা, তাঁর ভালবাসা, তাঁর ভয়, তাঁর প্রতি আশা এবং তাঁর প্রেমে উদ্বেল হয়ে উঠতে পারে। এর মাধ্যমে আপনি উবূদিয়্যাহ্‌ (আল্লাহর দাসত্ব) এর স্তরসমূহ অতিক্রম করতে পারেন; হতে পারে সে সময় আপনি হয়ত আপনার বিছানায় শুয়ে আছেন অথবা কোন পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছেন।
  • ২৫. আল হামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ, মাশা আল্লাহ… সুবহানাল্লাহ, নাউযুবিল্লাহ কখন কোনটি বলতে হবে
    • ১. আল হামদুলিল্লাহ: আল হামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যে কোন সুখবর বা ভালো অবস্থা সম্পর্কিত সংবাদের বিপরীতে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন ভাই আপনি কেমন আছেন? জবাবে বলা উচিত, আল হামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
    • ২.ইনশাআল্লাহ: ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে। ভবিষ্যতের হবে, করবো বা ঘটবে এমন কোন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নাত। যেমন ইনশাআল্লাহ আমি আগামী কাল আপনার কাজটি করে দিবো। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন।
    • ৩.মাশা আল্লাহ: মাশা আল্লাহ শব্দের অর্থ, আল্লাহ যেমন চেয়েছেন। এটি আল হামদুলিল্লাহ শব্দের মতোই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে কোনো সুন্দর এবং ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন, মাশা আল্লাহ তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছো।
    • ৪. সুবহানাল্লাহ: সুবহানাল্লাহ শব্দের অর্থ আল্লাহ পবিত্র ও সুমহান। আশ্চর্য জনক ভালো কোন কাজ হতে দেখলে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন সুবহানাল্লাহ! আগুনে পুরো ঘর পুরে গেলেও কুরআন শরীফ অক্ষত আছে।
    • ৫. নাউযুবিল্লাহ: নাউযুবিল্লাহ শব্দের অর্থ, আমরা মহান আল্লাহর কাছে এ থেকে আশ্রয় চাই। যে কোনো মন্দ ও গুনাহের কাজ দেখলে তার থেকে নিজেকে আত্মরক্ষার্থে এটি বলা হয়ে থাকে।